আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
সম্প্রতি বিভিন্ন টেকনোলজি সম্পর্কিত কনফারেন্স গুলোতে যেই বিষয়টি আমাদের সবার চোখে সবচেয়ে বেশী ধরা পড়ছে সেটি হচ্ছে AI কিংবা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। নতুন সকল টেকনোলজির সাথে জুড়ে দেয়া হচ্ছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নামের এই জিনিসটি। হোক সেটা মোবাইল, কম্পিউটার কিংবা ক্যামেরা। প্রতি ক্ষেত্রেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের জয়জয়কার। কি এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, কিভাবে শুরু হল এর ব্যবহার, কিভাবে কাজ করে এটি এসকল নানা প্রশ্নের উত্তর জানতে পড়ে নিন আজকের ব্লগটি।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি?
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স টার্মটির বাংলা হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হল কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটি শাখা। এখানে কম্পিউটার দ্বারা মানুষের বুদ্ধিমত্তা এবং চিন্তাশক্তিকে অনুকরণ করানোর চেষ্টা করা হয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন এতটাই প্রভাবশালী হয়ে দাঁড়িয়েছে যে একাডেমিক শিক্ষাতেও এটি একটি ক্ষেত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এখানে পড়ানো হয় বুদ্ধিমত্তা প্রদর্শন করার ক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটার এবং সফটওয়্যার কিভাবে তৈরি করতে হয়। সহজ ভাষায় সংজ্ঞায়ন করলে বলা যায় যন্ত্রের মাধ্যমে মানুষের বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তাশক্তিকে কৃত্রিম উপায়ে প্রযুক্তি নির্ভর করে বাস্তবায়ন করাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলে।
কম্পিউটার যেন মানুষের মতো ভাবতে পারে সেজন্য একে মিমিকস কগনেটিক এককে আনা হয়। এর ফলে এটি শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে এবং সমস্যার সমাধান করতে পারে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে যে কোন যন্ত্র তার পরিবেশকে অনুধাবন করতে পারে এবং লক্ষ্য অর্জন করে তার সাফল্যকে এগিয়ে নেয়ার জন্য পদক্ষেপ নিতে পারে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করা মেশিন গুলো ক্রমবর্ধমান ভাবে সক্ষম হয়ে ওঠে। বর্তমানে যে সক্ষমতা গুলোকে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে সেগুলো মানুষের বক্তব্যকে সফলভাবে বুঝতে পারে, দাবার মত কৌশলগত গেম সিস্টেম পরিচালনা করতে পারে এবং উচ্চতর স্তরের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারে, স্বয়ংক্রিয় ভাবে গাড়ি চালাতে পারে, সামরিক সিমুলেশন এবং জটিল উপাত্ত ব্যাখ্যা করতে পারে। এটি সম্ভবপর হয়েছে ডিপ লার্নিং এবং ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং এর কারণে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ইতিহাস
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স টার্ম টির সূচনা হয় ১৯৫৬ সালে। কিন্তু এর জনপ্রিয়তা খুব বেশি আগে বৃদ্ধি পায়নি। ডাটা স্পিড এবং ব্যবহারের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে, অ্যাডভান্সড অ্যালগোরিদমের কারণে এবং কম্পিউটারের ক্ষমতা এবং স্টোরেজের উন্নতিকরণের কারণে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বর্তমান সময়ে এতটা জনপ্রিয়তা লাভ করতে পেরেছে। ১৯৫০ সালের দিকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে গবেষণায় প্রবলেম সলভিং এবং সিম্বোলিক মেথডের মত বিষয়গুলো উদ্ভাবিত হয়। ১৯৬০ সালের দিকে ইউনাইটেড স্টেটসের ডিপার্টমেন্ট অফ ডিফেন্স আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ওপর নজর দেয়। এর কারণে তারা কম্পিউটারগুলোকে বেসিক হিউম্যান রিজনিং এর অনুকরণ করতে প্রশিক্ষণ দিতে থাকে। ডিফেন্স অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি সংক্ষেপে ডি এ আর পি এ ১৯৭০ সালে স্ট্রীট ম্যাপিং প্রজেক্ট সম্পন্ন করে। ২০০৩ সালে তারা নির্মাণ করে ইন্টেলিজেন্ট পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট। এটি অ্যাপেলের সিরি, অ্যামাজনের এলেক্সা, গুগলের গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট কিংবা উইন্ডোজের কর্টানা এরো অনেক আগের কথা। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে পূর্ববর্তী একাজগুলো কারণে বর্তমানে কম্পিউটার গুলোতে ব্যবহৃত অটোমেশন এবং ফর্মাল রিজনিং এর পথটি অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছিল। ডিসিশন সাপোট সিস্টেম এবং স্মার্ট সার্চ সিস্টেমেও এর প্রভাব লক্ষণীয়।
১৯৫০ থেকে ১৯৭০ সালে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের যুগান্তকারী কিছু উদাহরণ ছিল নিউরাল নেটওয়ার্কের উপর কাজ গুলো। ১৯৮০ থেকে ২০১০ সালের মাঝে মেশিন লার্নিং তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। ২০১০ সালের পর হতে বর্তমান পর্যন্ত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে ডিপ লার্নিং এ ব্রেক থ্রু এর কারণে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স রিপিটিটিভ লার্নিং এবং ডাটার মাধ্যমে উদ্ভাবনের প্রক্রিয়াটিকে অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসে। কিন্তু ম্যানুয়াল কাজগুলোকে অটোমেশনে না এনে কম্পিউটারাইজড টাস্ক গুলোকে অধিক পরিমাণে দ্রুততার সাথে অটোমেশনের আওতায় আনা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মূল উদ্দেশ্য। তবে এর জন্য হিউম্যান ইনকোয়ারির প্রয়োজন রয়েছে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিউরাল নেটওয়ার্কের প্রচুর পরিমাণে হিডেন লেয়ার ব্যবহার করে গভীর ডাটা বের করতে পারে এবং এনালাইজ করতে পারে। তবে কম্পিউটারকে ডিপ লার্নিং এর উপর প্রশিক্ষণ প্রদান করতে প্রয়োজন প্রচুর ক্ষমতা এবং প্রচুর পরিমাণে ডাটা। এর কারণ হলো এই পদ্ধতিতে কম্পিউটার গুলো ডাটা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে। তাই যত বেশি ডাটা দেয়া যাবে ফলাফল তথ্য সূক্ষ্ম হবে।
এ আই এক্সিস্টিং প্রোডাক্ট গুলোতে বুদ্ধিমত্তা যোগ করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই AI কে আলাদা কোনও অ্যাপ্লিকেশন হিসেবে বিক্রি করা হয় না। বরং যেসব প্রোডাক্ট আমরা সাধারণত ব্যবহার করে থাকি সেগুলোর সাথে AI যুক্ত করে তাকে করা হয় আরো উন্নততর।
এ আই ব্যবহার করে অর্জন করা যায় অবাক করা সূক্ষ্মতা। গুগল সার্চ এবং গুগল ফটোজ ব্যবহার করার সময় খেয়াল করবেন যে আপনি যত বেশি এপ্লিকেশনগুলোকে ব্যবহার করছেন সেগুলো ততটাই সূক্ষ্ম ফলাফল প্রদান করতে পারছে। এর কারণ হচ্ছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। AI এই সূক্ষ্মতা অর্জন করে ডিপ নিউরাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে।
এ আই প্রগ্রেসিভ লার্নিং অ্যালগরিদম ব্যবহার করে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। AI ডাটাতে স্ট্রাকচার এবং রেগুলারিটি খুঁজে বের করে যাতে অ্যালগরিদমটি এতে দক্ষতা অর্জন করতে পারে। ফলে অ্যালগরিদমটি যেমন নিজেকে দাবা খেলার মত বিষয়গুলো শিখাতে পারে, তেমনি পারে অনলাইনে আপনাকে পরবর্তী প্রডাক্টটি সাজেস্ট করতে। যখনই নতুন ডাটা দেয়া হবে তখনই AI তার সাথে তার পূর্বে তৈরি করা মডেলটিকে খাপ খাইয়ে নিবে।
এ আই ডাটা থেকে সকল তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। ডাটার মাঝেই লুকিয়ে থাকে আপনার প্রশ্নের সকল উত্তর। AI এর ব্যবহারের মাধ্যমে সেই লুকিয়ে থাকা উত্তর গুলো সহজেই খুঁজে বের করা যায়। এই ব্যাপারটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আপনি যখন একটি ইন্ডাস্ট্রিতে থাকবেন তখন আপনার প্রতিযোগীদের থেকে আপনাকে এগিয়ে রাখবে আপনার সংগ্রহে থাকা ডাটাগুলো। যার যত বেশি ডাটা রয়েছে, সে তত বেশি এগিয়ে রয়েছে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং বর্তমান বিশ্ব
প্রতিটি ইন্ডাস্ট্রিতে এখন AI এর জয়জয়কার। হাসপাতাল থেকে শুরু করে রিটেইল স্টোর গুলোতেও AI এর ব্যবহার রয়েছে। ইন্টারনেট অফ থিংসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ডাটা। আর AI এসব ডাটা ব্যবহার করে প্যাটার্ন গুলো শিখে বিভিন্ন টাস্ক অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসতে পারে। এই সুযোগটি বিভিন্ন ব্যবসায় আজকাল ব্যবহার করা হচ্ছে। AI এর এত সুবিধা থাকা সত্ত্বেও অনেকে মনে করেন একসময় পুরো বিশ্ব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দখলে চলে যাবে। কিন্তু জেনে রাখা প্রয়োজন যে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এখনো অতটা অ্যাডভান্সড হয়নি যে সকল ক্ষেত্রে হিউম্যান ব্রেইনকে হারিয়ে দিতে পারবে। তাই ভয়ের কোন কারণ নেই।
কিভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স
প্রতিটি ইন্ডাস্ট্রিতে AI সক্ষমতার চাহিদা হঠাৎ করে পূর্বের চেয়ে অনেক বেড়ে গিয়েছে। বিশেষ করে যেসব ইন্ডাস্ট্রিতে আইনি সহায়তা, পেটেন্ট সার্চ, রিস্ক নোটিফিকেশন এবং মেডিক্যাল রিসার্চ প্রয়োজন, সেসব ইন্ডাস্ট্রিতে AI এর চাহিদা এখন তুঙ্গে। চলুন এক নজরে AI এর কিছু ব্যবহার দেখে নিই।
স্বাস্থ্য সেবা
এ আই নির্ভর অ্যাপ্লিকেশনগুলো পার্সোনালাইজড মেডিসিন এবং এক্স-রে রিডিং প্রদান করতে পারে। ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সেবা অ্যাসিস্ট্যান্ট গুলো লাইফ কোচ হিসেবে সেবা প্রদান করে থাকে। ঔষধ খাওয়ার সময় হতে শুরু করে খাওয়া-দাওয়া এবং ব্যায়াম করার সময় পর্যন্ত এই অ্যাপ্লিকেশন গুলো আপনাকে জানিয়ে দেবে।
রিটেইল
এ আই ভার্চুয়াল কেনাকাটার সুবিধা প্রদান করতে পারে এবং তার সাথে নিতে পারে পার্সোনালাইজড রেকমেন্ডেশন। পারচেজ করার বিভিন্ন অপশন গুলো ক্রেতার কাছে প্রদর্শন করতে পারে অ্যাপ্লিকেশনগুলো। AI ব্যবহার করে স্টক ম্যানেজমেন্ট এবং সাইট লেআউট টেকনোলজির উন্নতি করা যায়।
ম্যানুফ্যাকচারিং
ফ্যাক্টরির ইন্টারনেট অফ থিংস থেকে সংগ্রহীত ডাটা এনালাইসিস করে AI পূর্বাভাস দিতে পারে এক্সপেক্টেড লোড এবং চাহিদা এর। এর জন্য রিকারেন্ট নেটওয়ার্ক নামের একটি নির্দিষ্ট ডিপ লার্নিং নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হয়।
ব্যাংকিং
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স মানুষের কর্মকাণ্ডের দক্ষতা, গতি এবং সূক্ষ্মতা বাড়িয়ে তোলে। AI ব্যবহার করে ভুয়া ট্রানজেকশন গুলো সহজেই চিহ্নিত করা যায়। দ্রুত এবং সূক্ষ্ম ক্রেডিট স্কোরিং করা যায়। ইনটেন্স ডাটা ম্যানেজমেন্ট টাস্ক গুলোকে অটোমেশনের আওতায় আনা যায়।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের চ্যালেঞ্জগুলো
যদিও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইন্ডাস্ট্রি গুলোর ভাগ্য খুবই দ্রুত পাল্টে দিচ্ছে, কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে এই প্রযুক্তিরও একটি সীমা রয়েছে। এর মূল সীমাটি হল যে এটি ডাটা থেকে শিখে। তার মানে ডাটাতে যদি কোন ভুল থাকে তাহলে ফলাফলেও ভুল থাকবে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের আরেকটি লিমিটেশন হল যে এখনকার AI গুলো নির্দিষ্ট একটি কাজ করার জন্য তৈরি করা হয়। তাই সে নির্দিষ্ট কাজটি ছাড়া অন্য কোন কাজ এটির পক্ষে করা সম্ভব নয়। কেমন পোকার খেলার জন্য তৈরি করা AI দাবা খেলতে পারবে না। স্বাস্থ্যসেবার জালিয়াতি ধরার জন্য যে AI সিস্টেম ব্যবহার করা হয়, ট্যাক্স জালিয়াতির জন্য সেই একই সিস্টেম ব্যবহার করা যায় না। তাই এতগুলো সিস্টেম তৈরি করা কিছুটা ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে।
কিভাবে কাজ করে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স?
বিশাল পরিমাণের ডাটা দ্রুত এবং সূক্ষ্মভাবে প্রসেসিং এর মাধ্যমে ইন্টেলিজেন্ট অ্যালগরিদম ব্যবহার করে প্যাটার্ন থেকে সফটওয়্যারকে অটোমেটিক্যালি শিক্ষা দেয়ার মাধ্যমে AI কাজ করে। AI এর ক্ষেত্রটি এতটাই বড় যে এর রয়েছে বেশ বড় বড় কয়েকটি সাব ফিল্ড। এই ফিল্ডগুলো মিলেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কে দিয়েছে প্রায় পরিপূর্ণ একটি রূপ। চলুন জেনে নেই কি সেগুলো।
মেশিন লার্নিং
এটি এনালিটিক্যাল মডেল তৈরির প্রক্রিয়াটিকে অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসে। এটি নিউরাল নেটওয়ার্ক, স্ট্যাটিসটিকস, অপারেশনস রিসার্চ এবং ফিজিক্স ব্যবহার করে ডাটার ভিতরে লুকিয়ে থাকা ইনসাইট গুলোকে খুঁজে বের করে। এই ইন্সাইট গুলো কোথায় খুঁজতে হবে এবং এর থেকে কিভাবে তথ্য বের করতে হবে তার জন্য আলাদা করে প্রোগ্রাম করার কোন প্রয়োজন পড়ে না।
নিউরাল নেটওয়ার্ক
এটি এমন এক ধরনের মেশিন লার্নিং যেটি নিউরনের মত কাজ করে। এক্সটারনাল ইনপুটের প্রতিক্রিয়া হিসেবে প্রতিটি ইউনিটের মধ্যে তথ্য আদান প্রদান করা এটির কাজ। এটি ব্যবহার করে অসমাধিত ডাটা থেকে সমাধান বের করা হয়।
ডিপ লার্নিং
এটি বিশাল নিউরাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে যাতে অনেক লেয়ারের প্রসেসিং ইউনিট রয়েছে। শক্তিশালী কম্পিউটিং ক্ষমতা ব্যবহার করে এটি জটিল প্যাটার্ন বের করে অনেক পরিমাণে ডাটা থেকে। সাধারণত ইমেজ এবং স্পিচ রেকোগ্নিশনে এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
কগনিটিভ কম্পিউটিং
এটি মেশিন গুলোর সাথে মানুষের মতো প্রাকৃতিক ইন্টার্যাকশন তৈরির চেষ্টা করে। মানুষের প্রসেস গুলো ছবি এবং কথার মাধ্যমে বুঝে তার উত্তর প্রদান করাই এর লক্ষ্য।
কম্পিউটার ভিশন
একটি ছবি কিংবা ভিডিওতে কি রয়েছে তা প্যাটার্ন রিকগনিশন এবং ডিপ লার্নিং এর মাধ্যমে বের করাই এটির কাজ। একটি মেশিন যখন একটি ছবিকে প্রসেস এবং এনালাইজ করে বুঝতে পারবে তখন সেটি তার আশেপাশের পরিবেশকে ব্যাখ্যা করতে সমর্থ হবে।
ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং
এনএলপি হল মানুষের ভাষা তৈরি করার সক্ষমতা। এটি ব্যবহার করে মানুষ তার কম্পিউটারের সাথে সাধারণ ভাষা ব্যবহার করে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে।
গ্রাফিক্যাল প্রসেসিং ইউনিট
গ্রাফিক্যাল প্রসেসিং ইউনিট কিংবা জিপিইউ এর শক্তিশালী কম্পিউটার ক্ষমতা AI টেকনোলোজি ব্যবহারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
দ্যা ইন্টারনেট অফ থিংস
এটি কানেক্টেড ডিভাইস গুলো থেকে প্রচুর পরিমাণে ডাটা তৈরি করে। এই ডাটা গুলো AI এনালাইজ করে ফলাফল প্রদর্শনের জন্য ব্যবহার করে থাকে।

Internet of Things নিয়ে জানতে দেখুন
IoT বা ইন্টারনেট অফ থিংস
অ্যাডভান্সড অ্যালগরিদম
এটি তৈরি করার উদ্দেশ্য হচ্ছে একাধিক স্তরের ডাটা পূর্বের চেয়ে আরো দ্রুত ভাবে এনালাইজ করা। জটিল সিস্টেম বোঝার জন্য এবং ইউনিক সিনারিওগুলো অপটিমাইজ করার জন্য এটি প্রয়োজনীয়।
অ্যাপ্লিকেশন প্রসেসিং ইন্টারফেস
এ পি আই কোডের এমন একটি পোর্টেবল প্যাকেজ যা এক্সিস্টিং প্রোডাক্ট গুলোতে AI ফাংশনালিটি যোগ করতে সাহায্য করে। হোম সিকিউরিটি সিস্টেমে এগুলো ইমেজ রেকোগ্নিশন যুক্ত করতে পারে। এমন আরও চমকপ্রদ ফিচার নিত্যনৈমিত্তিক ব্যবহার্য টেকনোলজি গুলোতে যুক্ত করা যায় এর মাধ্যমে।
অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সফটওয়্যার গুলোকে ইনপুট এবং আউটপুট গুলোর পিছনে যুক্তি বের করে ব্যাখ্যা করার সক্ষমতা প্রদান করে। যদিও সফটওয়্যারের প্রয়োজনে AI মানুষের মতো ইন্টারেস্ট করতে পারে, তবে মানুষের প্রতিস্থাপন হিসেবে এটি ব্যবহারের উপযোগী নয়। এবং এটি হওয়ার সম্ভাবনাও নিকট ভবিষ্যতে নেই।
কেমন লাগলো আমাদের আজকের লেখাটি? কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। নতুন কোন কিছু নিয়ে জানতে চাইলে আমাদের জানাতে পারেন। প্রযুক্তি নিয়ে অনেক কিছু জানতে ও শিখতে আমাদের সাথে থাকুন। চোখ রাখুন আমাদের ফেইসবুক পেইজে এবং প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য যোগ দিন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপে।
জ্ঞান চর্চা চলুক অবিরাম, প্রতিদিন
রেফারেন্সঃ Wiki, Britannica